গনবার্তা রিপোর্ট : সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে নির্মমভাবে হত্যার ঘটনায় গভীর ক্ষোভ ও শোক প্রকাশ করছে হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি। শুক্রবার (৮ আগস্ট) এক বিবৃতিতে এ হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করে সংগঠনটি।বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা সাংবাদিক আসাদুজ্জামানের শোকসন্তপ্ত পরিবার, সহকর্মী ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি গভীর সহমর্মিতা জানাই। তার আত্মত্যাগ যেন বৃথা না যায় — সেটাই আমাদের প্রত্যাশা।
এতে জানানো হয়, সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, আসাদুজ্জামান মুঠোফোনে একদল অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীর ভিডিও ধারণ করছিলেন, যা তার পেশাগত দায়িত্বের অংশ। কিন্তু দুঃখজনকভাবে, সেই মুহূর্তেই তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এই ঘটনা শুধু একটি মানবজীবনের করুণ পরিণতি নয়, এটি দেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, মতপ্রকাশের অধিকার ও সাংবাদিকদের নিরাপত্তার ওপর সরাসরি হামলা। এটি প্রমাণ করে, দেশে সন্ত্রাসী ও অস্ত্রধারীদের দুঃসাহস কতটা বেড়ে গেছে এবং তারা আইন ও প্রশাসনের ভয় না করে প্রকাশ্যে অপরাধ সংঘটনে উৎসাহিত হচ্ছে।
হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটির হিসাব মতে, গত সাত মাসে (জানুয়ারি থেকে জুলাই) কমপক্ষে ১৬৯টি হামলার ঘটনায় ২৮৪ জন সাংবাদিক নির্যাতন ও হয়রানির শিকার হয়েছেন। এ সব ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ১২৬ জন, লাঞ্ছনার শিকার হয়েছেন ২৫ জন, হুমকির সম্মুখীন হয়েছেন ৩৯ জন ও গ্রেফতার হয়েছেন ১০ জন সাংবাদিক। এছাড়াও ২৪ টি মামলায় ৯৪ জন সাংবাদিককে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
এতে আরো বলা হয়, এটা অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা যে, মার্চ মাসে রাজধানীতে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন এক নারী সাংবাদিক, যিনি একটি পত্রিকায় সিনিয়র রিপোর্টার হিসাবে কর্মরত। এই সময়ে সাইবার নিরাপত্তা আইন ২০২৩ এর অধীনে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ৫টি মামলা দায়ের করা হয়েছে ।
হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি বিবৃতিতে বলছে, সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানানো হচ্ছে, দ্রুত সময়ের মধ্যে এ হত্যাকাণ্ডের পেছনের প্রকৃত কারণ ও জড়িতদের চিহ্নিত করতে হবে। শুধু ‘সাময়িক গ্রেফতার’ বা ‘চোখে ধুলো দেয়া’ নয়, প্রকৃত অপরাধীদের মুখোশ উন্মোচন করতে হবে। যেন ভবিষ্যতে কেউ আর সাংবাদিকদের ওপর আঘাত করার সাহস না পায়। এছাড়া পেশাগত দায়িত্ব পালনরত সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে একটি স্বতন্ত্র ও কার্যকর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলা আবশ্যক। স্বাধীনভাবে সাংবাদিকতা চর্চা করার পরিবেশ না থাকলে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
Posted ৬:২০ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ০৮ আগস্ট ২০২৫
দৈনিক গণবার্তা | Gano Barta